ট্রপোস্ফিয়ার (Troposphere): বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে নীচে অবস্থিত বিভিন্ন উপাদান মিশ্রিত ও পরিবর্তনশীল সবচেয়ে ঘন ও ভারী যে স্তরটি ভূপৃষ্ঠকে স্পর্শ করে থাকে, তাকেই ট্রপোস্ফিয়ার বলে। (গ্রিক শব্দ Tropos মেশানো বা অশান্ত, Sphere অঞ্চল অর্থাৎ, Troposphere = মিশ্রিত বা অশান্ত অঞ্চল)।
বিস্তৃতি : ভূপৃষ্ঠ থেকে গড়ে 10 কিলোমিটার, নিরক্ষীয় অঞ্চলে 16–18 কিলোমিটার ও মেরু অঞ্চলে 7–8 কিলোমিটার।
গঠন : বায়ুমণ্ডল গঠনকারী বিভিন্ন উপাদান যেমন অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড, জলীয় বাষ্প, ধূলিকণা ইত্যাদির 75% এই স্তরে অবস্থান করে।
বৈশিষ্ট্য : i) এই স্তরে আমরা বসবাস করি।
ii) বায়ুপ্রবাহ, মেঘ, ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রবিদ্যুৎ ইত্যাদি বায়বীয় গোলযোগ এই স্তরে ঘটে। তাই এই স্তরের অপর নাম ক্ষুব্ধমণ্ডল।
iii) উচ্চতার তারতম্যের কারণে এই স্তরে উন্নতার পার্থক্য দেখা যায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রতি 1 কিলোমিটার উচ্চতার পার্থক্যে উয়তা প্রায় 6.5°C-10°C হ্রাস পায়। তাই এই স্তরকে ‘ক্রমহ্রাসমান উতা স্তর’ বলে। এই স্তরের সর্বনিম্ন উয়তা প্রায় – 56°C বা 217K হয়।
iv) বায়ুদূষণকারী প্রায় সকল উপাদানই এই স্তরে উপস্থিত থাকে।
v) বায়ুমণ্ডলের উপাদানের বেশিরভাগই এই স্তরে অবস্থান করায় বায়ুর চাপ এই স্তরে সর্বোচ্চ এবং প্রায় 76 সেন্টিমিটার উচ্চতাসম্পন্ন পারদস্তম্ভের চাপের সমান ।
(vi) এই স্তরে প্রপেলার বিমান চালানো হয় ৷
(vii) ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমায় প্রায় 3 কিলোমিটার অংশে উষ্ণতার হ্রাসবৃদ্ধি হয় না, এই অংশকে ট্রপোপজ বলে।