নাৎসিবাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি কীরূপ ছিল?

 উত্তরঃ- ‘বিয়ার হল অভ্যুত্থান’ (১৯২৩ খ্রি.)-এর অপরাধে জার্মানির নাৎসি নেতা অ্যাডল্ফ হিটলারের কারাদণ্ড হয়। কারার অন্তরালে থাকার সময় হিটলার ‘মাইন কাম্ফ’ (‘Mein Kampf) বা ‘আমার সংগ্রাম’ নামে তাঁর বিখ্যাত আত্মজীবনী রচনা করেন ।

নাৎসীবাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি

হিটলারের এই আত্মজীবনীতে নাৎসিবাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।

১) ‘ফুয়েরার’:- নাৎসি দলের সর্বেসর্বা হলেন ‘ফুয়েরার’| তিনি অভ্রান্ত এবং তাঁর ইচ্ছা বা মতামতের বিরোধী যাবতীয় চিন্তাধারা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। তাই নাৎসিরা তাঁর প্রতি সীমাহীন আনুগত্য জানান এবং তাঁর নির্দেশ পালন করেন।

২) হেরেনভক তত্ত্বঃ- হিটলার প্রচার করেন যে, একমাত্র জার্মানরাই খাঁটি আর্য জাতি, অন্য সব জাতিই বর্ণসংকর। তাই শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে জার্মানরা বিভিন্ন বর্ণসংকর জাতিগুলির ওপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার অধিকারী। এটি ‘হেরেনভক তত্ত্ব’ নামে পরিচিত ।

৩) ইহুদি-বিদ্বেষঃ- তীব্র ইহুদি-বিদ্বেষী হিটলার ক্রমাগত হত্যা, বিতাড়ন, চাকরি থেকে অপসারণ প্রভৃতির মাধ্যমে ইহুদিদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলেন ।

৪) সাম্রাজ্যবাদঃ- হিটলার জার্মানির বাইরের জার্মান জাতি-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলি জার্মানির অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশ্যে নগ্ন সাম্রাজ্যবাদী নীতি গ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন স্থানে অভিযানের পরিকল্পনা করেন ।

৫) নাৎসিকরণঃ- হিটলার—

ক) নাৎসি দল ছাড়া অন্য সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করেনক।

খ) নাৎসিবাদের প্রতি সৈনিক ও সরকারি কর্মচারীদের আনুগত্যের শপথ গ্রহণে বাধ্য করেন। 

গ) নাৎসি আদর্শে পাঠ্যপুস্তকগুলি রচনা করান।

ঘ) কমিউনিস্টদের নির্মমভাবে দমন করেন।

৬) ফ্রান্সের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিঃ- হিটলার তাঁর গ্রন্থে ফ্রান্সকে জার্মান জাতির ‘চিরন্তন শত্রু’ বলে চিহ্নিত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *