বায়ুমণ্ডলে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের অবস্থান এবং এর গুরুত্ব উল্লেখ করো।

স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার (Stratosphere): ট্রপোস্ফিয়ারের উপরে অবস্থিত বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় স্তরটি হল স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার। (গ্রিক শব্দ Stratos = শান্ত, Sphere = অঞ্চল অর্থাৎ, Stratosphere = শান্ত অঞ্চল বা শান্তমণ্ডল)।


বিস্তৃতি : ট্রপোপজের ঊর্ধ্বে প্রায় 50 কিলোমিটার পর্যন্ত এই স্তর বিস্তৃত।

গঠন : স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের উপাদানগুলি ট্রপোস্ফিয়ারের উপাদানগুলি থেকে অভিন্ন হলেও পরিমাণগতভাবে অনেকটাই কম থাকে।

বৈশিষ্ট্য : i) এই স্তরে বায়ুর ঘনত্ব খুবই কম হওয়ায় বায়ুচাপও কম হয়।

ii) বায়ুতে অক্সিজেনের পরিমাণ কম হওয়ায় এই স্তরে শ্বাসকার্য চালানো কষ্টকর।

iii) এই স্তরে জলীয় বাষ্প, বায়ুপ্রবাহ, মেঘ বা ঝড়বৃষ্টি অনুপস্থিত। তাই একে শান্তমণ্ডল বলে।

iv) উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই স্তরের উষ্ণতা বৃদ্ধি পায় এবং ঊর্ধ্বসীমায় পৌঁছে তা প্রায় 0°C হয়।

v) বায়ুমণ্ডল শান্ত থাকায় এই স্তরে জেটপ্লেন চলাচল করে। 

vi) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বাংশে অতিবেগুনি রশ্মি শোষণের মাধ্যমে অক্সিজেন (O2) গ্যাস ওজোন গ্যাসে (O3) রূপান্তরিত হয়। শান্তমণ্ডলের 20–35 কিলোমিটার উচ্চতায় ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি থাকে। তাই এই অংশটিকে ওজোন স্তর (Ozone layer) বলে। এই ওজোন গ্যাস সূর্য থেকে আসা তাপ ও অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে থাকে। ফলে, জীবজগৎ ধ্বংসের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকে। অতিবেগুনি রশ্মি শোষণের কারণেই এই স্তরের উয়তা বৃদ্ধি পায়। ওজোন গ্যাসের উপস্থিতির জন্য স্তরটিকে ওজোনোস্ফিয়ার বা ওজোনমণ্ডলও বলে।

vii) এই স্তরের শব্দ প্রতিফলিত করার ক্ষমতা আছে ।

viii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমায় অবস্থিত যে অংশে উয়তা অপরিবর্তিত থাকে, তাকে স্ট্র্যাটোপজ বলে।

জেনে রাখা ভালো : ট্রপোপজের অপর নাম স্তব্ধ স্তর। এটি ঘনমণ্ডল ও শান্তমণ্ডলের মধ্যে বায়ু চলাচল রোধ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *