মাধ্যমিক ইতিহাস সাজেশন ২০২৫ঃ প্রশ্ন ও উত্তরসহ সাজেশন (৮ নম্বরের প্রশ্ন ) ঃ
আগামী ২০২৫ সালের মাধ্যমিক ইতিহাস পরীক্ষায় ৮ নম্বরের প্রশ্নের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মাধ্যমিক পরীক্ষায় আসতে পারে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং তাদের উত্তর দেওয়া হলো। এই সাজেশনগুলো মনোযোগ দিয়ে অধ্যয়ন করলে পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন করা সহজ হবে।
মহাবিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো।
১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ, যা ভারতীয় ইতিহাসে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম হিসেবে পরিচিত, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর বিদ্রোহ ছিল। এটি ছিল একটি বহুমুখী আন্দোলন যা বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কারণে শুরু হয়েছিল। মহাবিদ্রোহের চরিত্র ও প্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে এটি যে কতটা জটিল এবং বিভিন্ন দিক থেকে গঠিত ছিল, তা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
১. বিদ্রোহের সামাজিক চরিত্র
মহাবিদ্রোহে ভারতের বিভিন্ন সমাজের অংশগ্রহণ ছিল। এতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল সিপাহী, জমিদার, কৃষক এবং রাজা-মহারাজারা।
- সিপাহীরা: বিদ্রোহের মূল চালিকাশক্তি ছিল সিপাহী, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল ভারতীয়। তারা ব্রিটিশ শাসকের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে বিদ্রোহে অংশ নেয়।
- কৃষক ও জমিদার: ব্রিটিশ রাজস্ব নীতির ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, এবং জমিদারদেরও ক্ষতি হচ্ছিল। এই কারণে তারা বিদ্রোহে যোগ দেয়।
- ধর্মীয় নেতারা: হিন্দু-মুসলিম ধর্মীয় নেতারাও নিজেদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সামাজিক অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলনে অংশ নেন।
২. বিদ্রোহের রাজনৈতিক চরিত্র
- মহাবিদ্রোহের মূল লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটানো এবং ভারতকে স্বাধীন করা।
- বিদ্রোহের নেতৃত্বে ছিল কিছু প্রাক্তন শাসক ও রাজা। মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরকে বিদ্রোহীরা তাদের নেতা হিসেবে গ্রহণ করেন।
- ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে একীভূত হয়ে রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে ওঠে, যদিও পুরো ভারত একযোগে আন্দোলনে নামেনি।
৩. অর্থনৈতিক চরিত্র
- ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ভারতীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। জমির ওপর অত্যধিক কর, শিল্প-কারখানার ধ্বংস এবং বিদেশী পণ্যের রপ্তানি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতিকর ছিল।
- কৃষকরা অত্যধিক করের শিকার হয়ে প্রতিবাদে অংশ নেয়, এবং বাণিজ্যিক শোষণের প্রতিবাদে বিদ্রোহ সৃষ্টি হয়।
৪. ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক চরিত্র
- ব্রিটিশরা ভারতের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছিল, যা জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে।
- গরু ও শুকরের চর্বি মিশানো কার্তুজের ব্যবহার এবং ধর্মীয় অনুভূতির অবমূল্যায়ন বিদ্রোহের মূল কারণ ছিল।
- হিন্দু ও মুসলিম ধর্মীয় গোষ্ঠী উভয়ই একত্রিত হয়ে বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করে, যা এটি একটি ধর্মীয় মিলনের উদাহরণ হিসেবে দেখা যায়।
৫. বিদ্রোহের স্থানীয় চরিত্র
- মহাবিদ্রোহ প্রধানত উত্তর ভারতে, বিশেষ করে দিল্লি, কানপুর, লখনউ, মীরাট, ও বারাণসীতে কেন্দ্রীভূত ছিল।
- তবে, দক্ষিণ ভারতে এবং অন্যান্য অঞ্চলে এর প্রকোপ তেমন ছিল না, কারণ বিদ্রোহের নেতা ও সিপাহীরা প্রধানত উত্তর ভারতের লোক ছিলেন।
৬. মহাবিদ্রোহ: প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম নাকি সিপাহী বিদ্রোহ?
- অনেক ইতিহাসবিদ মহাবিদ্রোহকে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম ধাপ হিসেবে মনে করেন, কারণ এটি স্বাধীনতার জন্য জাতীয় চেতনার সূচনা ঘটিয়েছিল।
- তবে কিছু ইতিহাসবিদ এটিকে শুধুমাত্র সিপাহী বিদ্রোহ হিসেবে চিহ্নিত করেন, কারণ এটি শুরু হয়েছিল সিপাহীদের বিরোধিতার মাধ্যমে এবং তাদের নেতৃত্বেই প্রথমে বিদ্রোহ সংগঠিত হয়েছিল।
উপসংহার
মহাবিদ্রোহ ছিল একটি ঐতিহাসিক, সমাজগত এবং রাজনৈতিকভাবে বহুমুখী আন্দোলন। এটি শুধুমাত্র সিপাহী বিদ্রোহ ছিল না, বরং ভারতীয় জাতীয়তার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন ছিল। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম বৃহৎ প্রতিবাদ হিসেবে এটি ভারতীয় জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার জন্য লড়াইয়ের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এর ফলে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রগতি শুরু হয়, যা ১৯৪৭ সালে সফলতায় পৌঁছায়।
নীল বিদ্রোহের কারণ ও বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ
নীল বিদ্রোহ ছিল ১৮৫৯ থেকে ১৮৬০ সালের মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের একটি বড়ো প্রতিবাদ, যা নীলচাষীদের অধিকার রক্ষার জন্য সংগঠিত হয়েছিল। নীল চাষের মাধ্যমে ব্রিটিশরা ভারতের কৃষকদের শোষণ করছিল এবং তাদের উপর একাধিক নিপীড়নমূলক নীতি চাপিয়ে দিচ্ছিল। এই বিদ্রোহটির বিভিন্ন কারণ ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা আমরা নিচে বিশ্লেষণ করব।
নীল বিদ্রোহের কারণ:
-
নীল চাষের শোষণ:
নীল চাষের প্রথাটি ব্রিটিশ শাসনকালে শুরু হয়েছিল। বাংলার জমিদাররা ও ব্রিটিশ শাসকরা কৃষকদের উপর নীল চাষের জন্য অত্যধিক চাপ সৃষ্টি করেছিল। কৃষকদের তাদের জমির কিছু অংশ নীল চাষের জন্য জমিদারদের কাছে দিতে হতো, যা ছিল অত্যন্ত লাভজনক, কিন্তু কৃষকদের জন্য ছিল অত্যন্ত কষ্টকর এবং ক্ষতিকর। -
বৈষম্যপূর্ণ চুক্তি:
নীল চাষের জন্য কৃষকদের ওপর যে চুক্তি চাপানো হয়েছিল তা ছিল অত্যন্ত বৈষম্যমূলক। চুক্তিতে কৃষকদের সুবিধা কিছুই ছিল না, তারা একরকম বাধ্য হয়ে নীল চাষ করত। এই চুক্তি তাদের জমির মুনাফা কমিয়ে দিত, কিন্তু ব্রিটিশদের লাভকে বাড়িয়ে দিত। -
অত্যাধিক কর ও শোষণ:
জমিদাররা, যাদের অধিকাংশই ব্রিটিশদের সহায়ক ছিল, কৃষকদের ওপর নানা ধরনের অযাচিত কর চাপিয়ে দিত। তাদের চাষের জন্য জমির অধিকাংশ ফসল ব্রিটিশ কোম্পানির হাতে চলে যেত, এবং কৃষকদের কাছে মাত্র একেবারেই সামান্য কিছু থাকত। -
বৈরি সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ:
নীল চাষের পরিপ্রেক্ষিতে কৃষকদের জীবনযাত্রার মান দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। তাঁরা ক্ষুধা, দারিদ্র্য, এবং শোষণের কারণে বিপর্যস্ত ছিলেন। এতে তাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল, যা বিদ্রোহের দিকে পরিচালিত করেছিল। -
কৃষকদের মধ্যে অজ্ঞানতা ও প্রতিরোধের অভাব:
শুরুতে কৃষকরা নীল চাষের বিরুদ্ধে সঠিকভাবে সংগঠিত হতে পারেননি, কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাদের মধ্যে সমবেদনা ও প্রতিরোধের জ্ঞান গড়ে ওঠে। এর ফলে বিদ্রোহের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
নীল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য:
-
কৃষক আন্দোলন:
নীল বিদ্রোহ মূলত কৃষকদের একটি আন্দোলন ছিল, যেখানে তারা ব্রিটিশ শাসন এবং জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। কৃষকরা নিজেদের অধিকার এবং ন্যায্য মূল্য দাবি করছিলেন। -
প্রতিবাদ ও সহিংসতা:
বিদ্রোহটি শুরু হয়েছিল শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দিয়ে, তবে পরে তা সহিংস হয়ে ওঠে। কৃষকরা জমিদারদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাদের সম্পদ নষ্ট করতে শুরু করে। তারা নীল চাষের জন্য জমি দেওয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছিল। -
সংগঠন ও নেতৃত্ব:
নীল বিদ্রোহের নেতৃত্বে ছিলেন কৃষকরা, তবে তাদের মধ্যে অনেক স্থানীয় নেতাও ছিলেন যারা এই আন্দোলনকে সংগঠিত করার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এর মধ্যে অন্যতম নেতা ছিল কর্ণেল সুরজিৎ সিং, যিনি কৃষকদের পক্ষে কথা বলেছিলেন। -
প্রতিবাদী কৌশল:
কৃষকরা একে অপরকে সহায়তা করে নীল চাষ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। তারা কখনো প্রতিবাদী সভা আয়োজন করতেন, কখনো জমিদারদের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ করতেন। তাদের প্রতিবাদে শক্তিশালী সামাজিক সহায়তা ছিল। -
অভ্যন্তরীণ বিভাজন:
এই বিদ্রোহে কৃষকদের মধ্যে কিছু বিভাজনও দেখা যায়। কিছু কৃষক ব্রিটিশ শাসনকে সমর্থন করে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, যা আন্দোলনের সফলতাকে কিছুটা বাধাগ্রস্ত করেছিল।
নীল বিদ্রোহের পরিণতি:
নীল বিদ্রোহ যদিও সফল হয়নি, তবে এর পরবর্তী পরিণতিতে কিছু পরিবর্তন ঘটে। বিদ্রোহের ফলে ব্রিটিশ সরকার কিছু উন্নয়নমূলক নীতি গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। নীল চাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষকদের শোষণ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করা হয়, এবং জমিদারদের ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়। তবে বিদ্রোহের পর কৃষক আন্দোলন আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং তারা আরও একযোগে প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করতে শুরু করে।
উপসংহার:
নীল বিদ্রোহ ছিল ভারতীয় কৃষকদের এক ঐতিহাসিক সংগ্রাম, যেখানে তারা শোষণ এবং অন্যায় নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিল। যদিও এই বিদ্রোহ সফল হয়নি, তবে এটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। এর মাধ্যমে শোষণ, ন্যায্য অধিকার এবং সমতার প্রতি কৃষকদের চেতনা বাড়ে, যা পরবর্তী সময়ে আরও বড়ো সংগ্রামগুলোর পথ প্রশস্ত করে।
ভারতের জাতীয়তাবাদ বিকাশে শিল্পী ও সাহিত্যিকদের অবদান
ভারতের জাতীয়তাবাদ বিকাশে শিল্পী ও সাহিত্যিকরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁরা তাঁদের সাহিত্যকর্ম, চিত্রকলা এবং সঙ্গীতের মাধ্যমে ভারতীয় সমাজে দেশপ্রেম, ঐক্য এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চেতনার বীজ বপন করেছেন। এঁদের অবদান ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছে।
শিল্পীদের অবদান
১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১):
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য ও সংগীত ভারতের জাতীয়তাবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল।
- তাঁর রচিত “জন গণ মন” ভারতীয়দের মধ্যে একতার বার্তা প্রচার করে, যা পরবর্তীতে ভারতের জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
- তাঁর রচনা “ঘরে বাইরে” ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল এবং স্বদেশি আন্দোলনের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে।
২. অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৭১-১৯৫১):
- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর চিত্রকলার মাধ্যমে ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছিলেন।
- তাঁর অমর সৃষ্টি “ভারতমাতা” চিত্রটি ভারতের জাতীয়তাবাদের প্রতীক হয়ে ওঠে। এটি মাতৃভূমির প্রতি দেশের মানুষের আবেগকে দৃঢ় করে তোলে।
৩. নন্দলাল বসু (১৮৮২-১৯৬৬):
- নন্দলাল বসু চিত্রকলায় জাতীয়তাবাদী চেতনা জাগিয়ে তুলেছিলেন।
- তাঁর চিত্রকর্ম ভারতীয় ঐতিহ্য এবং গ্রামীণ জীবনের সৌন্দর্যকে তুলে ধরে, যা ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি দেশবাসীর গর্ববোধ জাগিয়ে তোলে।
সাহিত্যিকদের অবদান
১. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৮৯৪):
- বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস “আনন্দমঠ” এবং এতে অন্তর্ভুক্ত “বন্দে মাতরম” গানটি জাতীয়তাবাদের মশাল জ্বালিয়েছিল।
- “বন্দে মাতরম” গানটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বিপ্লবীদের জন্য একটি যুদ্ধের আহ্বান হয়ে ওঠে।
২. সুব্রহ্মণ্য ভারতী (১৮৮২-১৯২১):
- তামিল জাতীয় কবি সুব্রহ্মণ্য ভারতী তাঁর কবিতায় স্বাধীনতা, সাম্য, এবং নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে জোর দেন।
- তাঁর রচনাগুলি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে জনগণকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
৩. স্বরাজ্য দিবাকর (বিপিনচন্দ্র পাল):
- বিপিনচন্দ্র পাল তাঁর লেখনীতে ভারতীয়দের মধ্যে স্বরাজের ধারণা প্রচার করেছিলেন।
- তাঁর পত্রিকা এবং বক্তৃতা ব্রিটিশ শাসনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করেছিল।
৪. লাল্লা লক্ষ্মণ রাও (প্রেমচাঁদ):
- প্রেমচাঁদ তাঁর উপন্যাস ও ছোটগল্পে গ্রামীণ ভারতের শোষণ ও দুরবস্থার চিত্র তুলে ধরেছিলেন।
- তাঁর লেখা জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে যোগদান করতে উদ্বুদ্ধ করে।
জাতীয়তাবাদী চেতনায় সঙ্গীত ও কবিতার ভূমিকা
১. স্বদেশি গান:
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাশাপাশি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের গান ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে।
- দ্বিজেন্দ্রলালের রচনা “ধনধান্যে পুষ্পে ভরা” দেশপ্রেম জাগ্রত করেছিল।
২. জাতীয়তাবাদী কবিতা:
- সরোজিনী নাইডুর কবিতা জাতীয়তাবাদের আদর্শ প্রচার করেছিল।
- তাঁর লেখা জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার প্রতি ভালোবাসা ও সংগ্রামের তাগিদ জাগিয়েছিল।
উপসংহার
ভারতের জাতীয়তাবাদের বিকাশে শিল্পী ও সাহিত্যিকরা তাঁদের চিত্রকর্ম, সাহিত্য এবং সঙ্গীতের মাধ্যমে দেশবাসীর মধ্যে দেশপ্রেম এবং ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তাঁদের প্রচেষ্টার ফলেই জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুধু রাজনৈতিক নয়, সাংস্কৃতিক দিক থেকেও এক শক্তিশালী ভিত্তি লাভ করেছিল।